Road is bad condition : দিগড়া থেকে নগরা যাওয়ার রাস্তার বেহাল চেহারা
Road is bad condition : রেল শহর খড়গপুর থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত খড়গপুর দুই নম্বর ব্লকের ছাঙ্গুয়াল গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত দিগড়া থেকে নগরা যাওয়ার রাস্তার বেহাল চেহারা এলাকাবাসীর জীবনে এক নিদারুণ দুর্ভোগ ডেকে এনেছে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের কোনো উদ্যোগ না থাকায় আজও কাঁচা এবং খোঁড়াখুঁড়ি অবস্থায় পড়ে রয়েছে এই রাস্তাটি। বর্ষাকালে হোক কিংবা রোদে, প্রতিদিন এই দুর্বিষহ পথ মাড়িয়ে চলতে বাধ্য হচ্ছেন তিনশো থেকে সাড়ে তিনশোটি পরিবার।

Road is bad condition : প্রায় দশ বছর ধরে এলাকাবাসীর পাকা রাস্তার দাবি
দাবি উঠেছে, প্রায় দশ বছর ধরে এলাকাবাসীরা বারংবার পাকা রাস্তার দাবি জানিয়ে এলেও আজ পর্যন্ত কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য অনুযায়ী, নগরা থেকে দিগড়া কিংবা শীর্ষি যাওয়ার অন্য বিকল্প রাস্তাটিও সমানভাবে বেহাল। ফলে যাতায়াত কার্যত বন্ধপ্রায় হয়ে পড়েছে।

পাশে অবস্থিত নগরা প্রাথমিক বিদ্যালয়
Road is bad condition : এই রাস্তার পাশে অবস্থিত নগরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে প্রায় ৮২ জন ছাত্রছাত্রী। বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা রূপসী চট্টোপাধ্যায় পাল জানিয়েছেন, রাস্তাটি এতটাই খারাপ যে অনেক ছাত্রছাত্রী প্রতিদিন স্কুলে আসতে পারে না। এতে করে পড়াশোনার ক্ষতির পাশাপাশি স্কুলে উপস্থিতির হারও দিন দিন কমছে।

চার চাকার গাড়ি তো দূরের কথা, টোটো পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না
অবস্থার চরমতা বোঝা যায় আরও একটি ভয়াবহ বাস্তবতা থেকে। যদি কেউ অসুস্থ হন কিংবা গর্ভবতী মহিলাকে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে নিতে হয়, তাও সম্ভব হয় না। কারণ, চার চাকার গাড়ি তো দূরের কথা, টোটো পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না এই গ্রামে। এম্বুলেন্স এসে দাঁড়ায় দেড় কিলোমিটার দূরে, সেখান থেকে হাতগাড়ি বা অন্য কোন উপায়ে রোগীকে নিয়ে যেতে হয়। এই পরিস্থিতিতে একাধিকবার প্রাণহানির আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের।
এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন
এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত, বিডিও, এমনকি জেলা পরিষদের কাছেও একাধিকবার লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে। কিছুদিন আগেই এলাকার পরিদর্শনে সাহেবরাও এসেছিলেন, কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান পরিবর্তন নেই।

এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যা মিনু রানা বলেন
এ বিষয়ে এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যা মিনু রানা বলেন, “আমরা ওপরমহলে বারবার জানিয়েছি। তবে বর্তমানে আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ফান্ড নেই, যার ফলে কাজ শুরু করতে দেরি হচ্ছে। দিদিকে বলো প্রকল্পে আবেদন জানানো হয়েছে এবং জেলা পরিষদ থেকেও পরিদর্শনে লোক এসেছিলেন। শুনেছি একটি এস্টিমেট তৈরি হয়েছে। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু হবে।”
পাশাপাশি তিনি সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশে অনুরোধ জানান, “আপনারাই একটু তুলে ধরুন বিষয়টা, যাতে উচ্চমহল গুরুত্ব দেয়।”

এলাকাবাসীরা আর প্রতিশ্রুতিতে ভরসা রাখতে পারছেন না
তবে এলাকাবাসীরা আর প্রতিশ্রুতিতে ভরসা রাখতে পারছেন না। তাঁদের সাফ কথা – “আমরা কোন বড় কিছু চাই না, শুধু একটু রাস্তা তৈরি হোক। আমাদের শিশুরা স্কুলে যেতে পারুক, অসুস্থ হলে হাসপাতালে পৌঁছানো সম্ভব হোক। এই নরক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি চাই।”

Road is bad condition : এ যেন প্রশাসনিক উদাসীনতার এক নির্লজ্জ নিদর্শন।
খড়গপুর শহরের এত কাছে থেকেও অবহেলিত এই গ্রামের মানুষের নিত্যদিনের লড়াই যেন আধুনিক ভারতের এক নির্মম বাস্তবচিত্র। পাকা রাস্তার দাবিতে যখন শহরাঞ্চলে একাধিক প্রকল্প কার্যকর হয়েছে, তখন এমন গ্রামের এক ফালি রাস্তাও দশ বছর ধরে অপেক্ষায় — এ যেন প্রশাসনিক উদাসীনতার এক নির্লজ্জ নিদর্শন। এখন দেখার, এই প্রতিবেদন উচ্চ মহলের নজরে পড়ে আদৌ কিছু বদল আসে কি না।