unstoppable peddler of humanity : অনির্বাণ দীপের আলোর সন্ধান দিতে এই প্রতিবেদন।
unstoppable peddler of humanity : কামিনী রায়ের সেই কবিতার লাইন মনে পড়ে? “ আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে,আসে নাই কেহ অবনী ‘পরে, সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে মোরা পরের তরে ”
এ শুধু কবিতা নয়। এক কালজয়ী উক্তি। আজকের স্বার্থপরতার এই যুগে কবির কল্পনার আদর্শ চরিত্র অ-মিল। তবে অযুত ‘না’ এর মাঝে কোথাও এক কোণায় খুঁজে পাওয়া যায় এক বিন্দু আলো। সেই দুর্লভ আলোক বিন্দুর সন্ধানে আমরা সততই ব্রতী। আমরা খুঁজে পেয়ে ধন্য সেই আলোকবিন্দুকে। যার দ্যুতি সারা সমাজে ব্যতিক্রমী এক আলোকসম্পাত!

unstoppable peddler of humanity : কবির কল্পনার সেই চরিত্রকে আবিষ্কার করলাম আমরা সানন্দা নিউজ।
unstoppable peddler of humanity : কবির কল্পনার সেই চরিত্রকে আবিষ্কার করলাম আমরা সানন্দা নিউজ। আজ সেই অনির্বাণ দীপের আলোর সন্ধান দিতে এই প্রতিবেদন। শুনলে মনে হবে গল্প, তবে গল্প নয়। এক অবিশ্বাস্য বাস্তবতার
ইনি বাপ্পা সরকার! আমাদের এই বাংলার মানবতার এক নাথামা ফেরিওয়ালা! যিনি এই প্রখর গরমে, কনকনে ঠান্ডায় কিংবা প্রবল ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে অসহায় দুঃস্থ মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে সাহায্য করে চলেছেন দীর্ঘদিন ধরে।

নিম্ন দরিদ্র পরিবারের জন্ম হয় বাপ্পা সরকারের।
সাল ১৯৯৮ ১৫ই জুন উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে এক নিম্ন দরিদ্র পরিবারের জন্ম হয় বাপ্পা সরকারের। বাবা সইফুল রহমান, পেশায় বাড়িতেই একটি ছোট্ট মুদিখানার দোকান চালাতেন। ২০১৯ সালে তিনি মারা যান। মা মনোয়ারা খাতুন, তিনি বাড়ির ঐ ছোট্ট মুদিখানার দোকান চালাচ্ছেন। বাপ্পা সাহেবঘাটা এন,এন হাইস্কুলে মাধ্যমিক পাশ করেন।দেবীনগর কৈলাস চন্দ্র রাধারানী বিদ্যপীঠ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন।রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী কমপ্লিট করেন। বাপ্পা ২০২১ সালে থেকে Hdfc bank – এ একজন কর্মকর্তা।

unstoppable peddler of humanity : বাবাকে দেখেই, মানুষের পাশে দাঁড়াতে শিখেছে।
শৈশবে বাপ্পা স্কুলে যাওয়ার সময় মা তাকে টিফিনে যে টাকা দিতেন, সেই টাকা থেকেই বাপ্পা রাস্তায় কোন অভুক্ত মানুষকে দেখলে সেই টিফিনের টাকাটা দিয়ে দিত। বাপ্পা ছোটবেলায় তার বাবাকে দেখেই, মানুষের পাশে দাঁড়াতে শিখেছে। যে সংসারে প্রত্যেকটা পদক্ষেপে দারিদ্র্যের কাঁটা বিছানো। প্রত্যেকদিন দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করেও অসহায় দুঃস্থ মানুষদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন বাপ্পার বাবা সইফুল বাবু । কারণ সইফুল বাবু বিশ্বাস করতেন আত্মকেন্দ্রিক হয়ে শুধুমাত্র নিজেরটুকু নিয়ে বেঁচে থাকা যায় না।

সন্তানদের আচার ব্যবহার আসলেই বাবা-মায়ের শিক্ষাতেই
আসলে বাবা এত বড় মনেরমানুষ ছিলেন আর তাঁর সন্তান এত মহান ও মাটির মানুষ হতে পারে এটাই স্বাভাবিক । সন্তানদের আচার ব্যবহার আসলেই বাবা-মায়ের শিক্ষাতেই গড়ে ওঠ। সন্তানদের মন মানসিকতা ও ব্যবহার বাবা-মায়ের শিক্ষা ও পরিচয় বহন করে । হ্যাঁ ! সত্যিই তো মা বাবা হলেন জীবনের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ! যে বাবা ছিলেন এত মহান ; যার নিজের আর্থিক অভাব থাকার সত্বেও সবার আগে মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াতেন , অসহায় মানুষদের সাহায্য করতেন, বরাবরই এগিয়ে আসতেন সেই মানুষটারই যোগ্য ছেলে বাপ্পা।

দুহাত ভরে সাহায্য করে যাচ্ছে মানবতার ফেরিওয়ালা বাপ্পা সরকার।
আজকের যুগে দাঁড়িয়ে যেখানে সকলেই নিজেদের কথা ছাড়া অন্যের কথা ভাবেন না। সেই পটভূমিতেও অসহায়দের সাহায্য করতে তিনি রাস্তায় নেমে এসেছেন। সম্বল হারা মানুষগুলিকে রোজেই পেটের টানে রাস্তায় বের হতে হচ্ছে। যারা শুধু একবেলা এক মুঠো খাবারের জন্য রোড ঝড়-বৃষ্টি কে উপেক্ষা করে রাস্তায় সাহায্যের জন্য ঘুরছে। তাদের দুহাত ভরে সাহায্য করে যাচ্ছে মানবতার ফেরিওয়ালা বাপ্পা সরকার।
unstoppable peddler of humanity : বাবা মায়ের শিক্ষাই তো সন্তানের মধ্যে স্থানান্তরিত হয়।
আমরা সব সময় বাপ্পার মানবিকতার মুগ্ধ হয়ে যাচ্ছি।আসলে বাবা মায়ের শিক্ষাই তো সন্তানের মধ্যে স্থানান্তরিত হয়। যে মানুষটার বাবা এভাবে ভেবেছিলেন অন্যদের জন্য। তার ছেলেও যে সেই একই পথে হাঁটবেন তা বলাই বাহুল।
২০১৯ সালে বাপ্পার বাবা সইফুলবাবুর হঠাৎ কিডনির সমস্যা দেখা দেয়। সেই সময় চিকিৎসার জন্য বাপ্পার পরিবার অনেক মানুষের কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন। কিন্তু না ! কেউই সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি। সেই সময় কেউ সাহায্য করেননি বাপ্পার পরিবারকে। তারপর বাপ্পার বাবা সইফুল বাবু ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

unstoppable peddler of humanity : বাপ্পা প্রতিজ্ঞা করেছিলেন,
তখনই বাপ্পা প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, তিনি যদি জীবনে কিছু একটা করতে পারেন, তাহলে কোন অসহায় মানুষকে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে দেবেন না। কোন সম্বলহীন মানুষকে কষ্টে ও না খেতে পেয়ে থাকতে দেবেন না।এরপর ২০২১ সালে তিনি hdfc bankA এ একটা চাকরি পান। এবং তারপর থেকে তিনি প্রায় হাজারেরও বেশি অসহায় মানুষদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন।
হ্যাঁ ! কিছু ক্যামেরার সামনে ; তবে এর চেয়ে বহু গুণ বেশি ক্যামেরার বাইরেও। তবে যতদিন ধরে বাপ্পা ব্যাংকের চাকরি পেয়েছেন , সেই দিন থেকে আজ অব্দি বাপ্পার ব্যাংকের বেতনের টাকা , কখনোই তার মায়ের হাতে দিতে পারেননি। কেন জানেন ? বাপ্পা তার প্রত্যেক মাসের বেতনের পুরো টাকাটাই অসহায় মানুষদের দিয়ে দেন। এরকম মানুষ কতজনকে পাওয়া যায় যিনি নিজে বেতনের সবটুকু দিয়ে মানুষের পাশে দাড়াচ্ছেন।

বাপ্পাদের সংসার চলছে কি করে ? প্রশ্ন আসতেই পারে
এই প্রশ্নটাও আমাদের মধ্যে ছিল। উত্তর পেলাম। বাপ্পাদের এখনো সংসার চলছে, তার বাড়ির ওই ছোট্ট মুদিখানা দোকান দিয়েই। তিনি এখনো পর্যন্ত ১৩ জন অসহায় মায়ের দায়িত্ব নিয়েছেন। না ! শুধু এক দুই দিনের জন্য বা এক দুই মাসের জন্য নয় ! সারা জীবনের জন্য ওঁদের সমস্ত রকম দায়িত্ব নিয়েছেন।
বাপ্পা বলেন , তার জীবনের একটাই লক্ষ্য,সেটা হলো একটা বৃদ্ধাশ্রম করা। যাতে রাস্তায় পড়ে থাকা অসহায় মায়েদের তার সেই বৃদ্ধাশ্রমে এনে তিনি সেবা করতে পারেন।

নিজের জীবনকে অন্যের জন্য উৎসর্গ করে দিয়েছেন বাপ্পা সরকার।
কিন্তু এমনটা কি করে সম্ভব ! যে মানুষ নিজের জীবনকে অন্যের জন্য উৎসর্গ করে দিয়েছেন ! যিনি নিজের জন্য নয় , বাঁচেন অন্যের জন্যই ! তার জীবনে কোন স্বপ্ন শেষ হতে পারে না ! আশা ছাড়া সত্যি কি বাঁচা যায় ? তাও আবার এমন একজন মানুষ ? আপনি এগিয়ে চলুন বাপ্পা। আপনার এই নিরন্তর পথ চলা সার্থক হোক। সানন্দা নিউজ এর পক্ষ থেকে রইল অনেক অনেক শুভেচ্ছা। আসলে আপনি তো কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য এর সেই কবিতার লাইনের মানুষ
“আমি যেন সেই বাতিওয়ালা, যে সন্ধ্যায় রাজপথে-পথে বাতি জ্বালিয়ে ফেরে”। আপনি সত্যিই আজ আলোর পথযাত্রী,আপনাকে স্যালুট বাপ্পা!