
Maharaj : রহস্যজনকভাবে প্রাণ গেল জন্মসূত্রে সাঁকরাইলের কুলটিকরির বাসিন্দা বৃন্দাবনের এক সাধু মহারাজের।

বৃন্দাবন থেকে বাড়ি ফেরার পথে উড়িষ্যার সম্বলপুরে রহস্যজনকভাবে প্রাণ গেল জন্মসূত্রে সাঁকরাইলের কুলটিকরির বাসিন্দা বৃন্দাবনের এক সাধু মহারাজের। সম্বলপুর স্টেশন থেকে আহত অবস্থায় সাধুকে উদ্ধার ও হাসপাতালে প্রাণ বিয়োগ এর ঘটনার পর ধোঁয়াশায় পরিবার।
দীর্ঘ ৫২ বছর আগে সংসারের মায়া ত্যাগ
Maharaj: জানা গিয়েছে, নিহত ব্যক্তির নাম সূর্যকান্ত মিশ্র, দীর্ঘ ৫২ বছর আগে সংসারের মায়া ত্যাগ করে বৃন্দাবন সাধু সন্ত এর জীবনযাপন করছিলেন। নিয়মিত যোগাযোগ ছিল সাঁকরাইলের কুলটিকরিতে থাকা পরিবারের সঙ্গে।তবে শেষে বাড়ি ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন মহারাজ সূর্যকান্ত মিশ্র।
বছর ১০- ১২আগে মহারাজ সূর্যকান্ত মিশ্রকে জানানো হয় তাঁর মা গত হয়েছেন। তখনও কিছুদিনের জন্য তার জন্মভূমিতে ফিরে আসেন মহারাজ।কিছু দিন থেকে মায়ের কৃতকাজ শেষ করে আবারও পাড়ি দেন বৃন্দাবনে।
আচমকাই বাড়ি ফিরবেন বলে ফোন করেন
Maharaj : ১৭ই মে আচমকাই ফোন করে জানান তিনি বাড়ি ফিরছেন। ১৯ তারিখ নাগাদ খড়গপুর স্টেশনে একটি বড় গাড়ি নিয়ে যাওয়ার কথাও তিনি জানান।কাছে অনেক জিনিসপত্র ছিল যা বড় গাড়ি লাগবে নিয়ে আসার জন্য।
পরিবারের লোক ভাবছিলেন বয়স হয়েছে তাই হয়তো তিনি নিজের জন্মভূমিতে ফিরে আসতে চান চিরকালের জন্য। স্টেশনে বড় গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করলেও তিনি ট্রেন থেকে নামেন না, বারংবার যোগাযোগ করার পর তিনি ফোনে জানান ট্রেন লেটে চলছে তাই দেরি হয়েছে, ২০ তারিখের দিকে তিনি স্টেশনে নামবেন, কুড়ি তারিখ আবারও খড়গপুর স্টেশনে গেলে মহারাজের কোনো হদিস পাওয়া যায় না।
ভাঙ্গা গলায় কাঁদতে কাঁদতে জানান সমস্ত কিছু চুরি হয়ে গেছে
এরই মাঝে কয়েকদিন কেটে যায় ২৩শে মে উড়িষ্যার সম্বলপুর স্টেশন থেকে তিনি ফোন করেন , ভাঙ্গা গলায় কাঁদতে কাঁদতে তিনি জানান তার সমস্ত কিছু চুরি হয়ে গেছে। এরপরই ওখানকার একজন রেলওয়ে পুলিশ বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা জানান, আপনাদের বাড়ির লোক অসুস্থ অবস্থায় প্লাটফর্মে রয়েছে এসে নিয়ে যান।

শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন
ঐদিনই রাতের ট্রেন ধরে পরিবারের কয়েকজন উড়িষ্যার সম্বলপুর স্টেশনে পৌঁছান , অনেক তোড়জোড় খোঁজাখুঁজির পরে পুলিশ ও স্টেশন মাস্টারের সহযোগিতায় খবর পান তারা উড়িষ্যার এক হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন মহারাজ সূর্যকান্ত মিশ্র। জানা যায় তার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন তারা দেখেন , বেশ কয়েকদিন তিনি না খেয়ে অসুস্থ অবস্থায় প্লাটফর্মে পড়েছিলেন। কোনো এক সহৃদয় ব্যক্তি স্টেশন মাস্টারের সহযোগিতায় মহারাজ কে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
পরিবারের লোক পৌঁছানোর পরেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন
পরিবারের লোক পৌঁছানোর পরেই তিনি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে মহারাজের বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর, তবে মারা যাওয়ার আগে তার এই অবস্থা কিভাবে হলো জিজ্ঞেস করলে? মহারাজের বলা শেষ শব্দ টুকু ছিল ‘শ্যাম’। মহারাজের চিকিৎসা করা ডাক্তার বাবু পরিবারে লোকেদের জানান ওনাকে গুরুতর ভাবে মারধর করা হয়েছে, শরীরের বেশ কিছু জায়গায় ক্ষতচিহ্ন রয়েছে । ওনার দাড়ির বেশ কিছুটা অংশ কাটা হয়েছে জোরপূর্বক ভাবে দাবী পরিবারের।
মহারাজের প্রাণ বিয়োগের ঘটনায় রহস্য দেখছেন পরিবারের লোকজন
যে ব্যক্তির খড়গপুর স্টেশনে নামার কথা ছিল তিনি উড়িষ্যার সম্বলপুর স্টেশন পৌঁছালেন কিভাবে ?
উনার সঙ্গে থাকা জিনিসপত্র চুরি হলো কিভাবে?
এবং সব থেকে বড় প্রশ্ন ওনাকে মারধর করলো কে?
দাড়ি ছিঁড়ে ফেলল কারা?
পরিবারের দাবি উনি যখন বৃন্দাবন থেকে ট্রেনে ওঠেন কেউ বা কারা তাকে হয়তো ফলো করেছে, ছলে বলে কৌশলে কোনো জায়গাতে নিয়ে গিয়ে সমস্ত জিনিস ছিনতাই করে মারধর করে মৃত ভেবে ফেলে যায়।

মহারাজের মোবাইলে পাওয়া গেছে সন্দেহজনক কল রেকর্ডিং !
Maharaj : পরিবারের দাবি মহারাজ সূর্যকান্ত মিশ্রের মোবাইল ফোনে পাওয়া গেছে সন্দেহজনক বেশ কিছু কল রেকর্ডিং, যা শুনে পরিবারের মনে হচ্ছে পুলিশ তদন্ত করলে হয়তো এই রহস্যের পর্দা ফাঁস হবে। মহারাজ সূর্যকান্ত মিশ্রের ভাই লক্ষীকান্ত মিশ্র জানান তারা পুলিশের কাছে সমস্ত বিষয় টি তুলে ধরবেন এবং তদন্তের আর্জি জানাবেন।